শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:১২ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
কসমেটিক সার্জারি ও চিকিৎসার সফলতা

কসমেটিক সার্জারি ও চিকিৎসার সফলতা

স্বদেশ ডেস্ক:

সুদর্শন মানুষের প্রতি সবার আকর্ষণ জন্মগত। গোত্র, বর্ণ অনুযায়ী মানবদেহের বিভিন্ন অংশের গড়নও ভিন্ন হয়ে থাকে। জন্মগত কারণ, দুর্ঘটনায় অঙ্গহানি, ক্যানসার বা পুড়ে যাওয়ায় মানুষের সৌন্দর্যহানি ঘটতে পারে। তবে এখন শরীরের আক্রান্ত অংশের গঠন ফিরিয়ে আনা, সেই অংশের কাজ পুনরুদ্ধার করা, পরিশেষে সৌন্দর্য রক্ষা করা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও অ্যাসথেটিক বা কসমেটিক সার্জারি খুব সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে চলছে। দুর্ঘটনায় সৌন্দর্য বা পুড়ে যাওয়া অংশের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে কসমেটিক সার্জারি সাধারণ এক প্রক্রিয়া। কিছু ক্ষেত্রে একাধিকবার অস্ত্রোপচার লাগতে পারে। অগ্নিদগ্ধ রোগীর ক্ষেত্রে অনেক সময় পুড়ে যাওয়ার কারণে কাঁধ, হাত, পা ইত্যাদি অঙ্গের টিস্যু শক্ত হয়ে গিয়ে সেগুলোর স্বাভাবিক সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়। রোগীর এসব অঙ্গ ব্যবহার করে কাজকর্ম করা অনেকটা সীমিত হয়ে পড়ে। সে ক্ষেত্রে পুড়ে যাওয়া অঙ্গের শক্ত হয়ে যাওয়া টিস্যু অপসারণ করে শরীরের অন্য কোনো অংশের সুস্থ টিস্যু প্রতিস্থাপন করে সেই অঙ্গের স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়। ঠোঁটকাটা বা তালুকাটা সমস্যাও এমন সার্জারির মাধ্যমে সারিয়ে তোলা যায়।

বডি কনট্যুরিং বা বডি শেপিং সার্জারি : স্থূলতার কারণে আমাদের শরীরের অ্যানাটমিক্যাল শেপ বা আকৃতির পরিবর্তন হয়, যাতে সৌন্দর্যহানি ঘটে। এর সঙ্গে অতিরিক্ত চর্বির কারণে নানা রোগের উদ্ভব হয়। ডায়েট, শরীরচর্চার মাধ্যমে স্থূলতা কমলেও কিছু ক্ষেত্রে সার্জিক্যাল প্রসিডিওরের মাধ্যমে শারীরিক সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব। যেমন- লাইপোসাকশন (চর্বি অপসারণ), ব্রাকিপ্লাস্টি (বাহুর অতিরিক্ত চামড়া অপসারণের মাধ্যমে ত্বক টান টান করা), পেটের অতিরিক্ত চর্বি অপসারণ, লাভ হ্যান্ডেলিং এরিয়া, ঘাড়ের অতিরিক্ত চর্বি অপসারণ, ডাবল চিন চর্বি অপসারণের মাধ্যমে উপস্থাপনযোগ্য শারীরিক অবয়ব প্রদান করা সম্ভব।

ব্রেস্ট অগমেন্টেশন, রিডাকশন, মাস্টোপেক্সি : নানা কারণে নারীর স্তনের আকার ছোট বা বড় ও ঝুলে যেতে পারে। ফ্যাট গ্রাফটিং অথবা ইমপ্ল্যান্টের মাধ্যমে স্তনের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলা সম্ভব। স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীর স্তন থেকে ক্যানসার অপসারণ করাও সম্ভব অনকোপ্লাস্টিক ব্রেস্ট সাজারির মাধ্যমে।

অ্যাবডোমিনোপ্লাস্টি, লাইপোসাকশন : বেশি চর্বির কারণে পেট স্থূলভাব ধারণ করে, চামড়া ঝুলে পড়ে। লাইপোসাকশন কিংবা অ্যাবডোমিনোপ্লাস্টি (টামিটাক অপারেশন) অথবা দুটি পদ্ধতি একসঙ্গে ব্যবহার করে পেটের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা যায়।

গাইনেকোমেশিয়া : পুরুষের অযাচিত স্তন বড় হলে লাইপোসাকশন বা দাগহীন সার্জারির মাধ্যমে পুরুষালি শারীরিক গঠন দেওয়া সম্ভব।

রাইনোপ্লাস্টি : ভোঁতা নাক, নাকের বাঁশি বাঁকা বা প্রসারিত নাকের মানুষ অ্যাসথেটিক রাইনোপ্লাস্টির মাধ্যমে সুন্দর নাকের অধিকারী হতে পারেন।

লিপ অগমেন্টেশন/রিডাকশন : পুরু ঠোঁট চিকন ও পাতলা ঠোঁট ফ্যাট গ্রাফটিং বা ফিলারের মাধ্যমে পুরু করে তোলা যায়।

ব্লেফারোপ্লাস্টি : কোঁচকানো চোখের পাতা (ওপর/নিচ) সার্জারি করে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে বোটক্স থেরাপির মাধ্যমে ত্বক টান টান করা সম্ভব।

ব্রাউপ্লাস্টি : ভুরুর সৌন্দর্য বাড়ানোর অস্ত্রোপচার।

ফেস লিফট : সার্জিক্যাল ও নন–সাজিক্যাল পদ্ধতিতে মুখম-লের কোঁচকানো চামড়া টান টান করা যায়।

ভ্যাজাইনোপ্লাস্টি : ঘনঘন সন্তান প্রসব করায় বা অন্য কোনো কারণে নারীর জননেন্দ্রীয় ঢিলে হয়ে যায়। সার্জারির মাধ্যমে এ সমস্যা দূর করা সম্ভব।

ফ্যাট গ্রাফটিং, ফিলার : শরীরের যে কোনো ছোটখাটো অসঙ্গতি দূর করা যায়।

তবে সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে কসমেটিক সার্জারি করুন।

লেখক : সহকারী অধ্যাপক

ত্বক, চর্ম যৌন ও ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জারি বিভাগ

শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877